বৈশাখের তীব্র তাপপ্রবাহে রাজধানী ঢাকাসহ পুড়ছে সারা দেশ। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হলেই প্রচণ্ড গরমে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে কর্মস্থলমুখী নগরবাসী। গত এক সপ্তাহ ধরে দুর্ভোগের শেষ নেই খেটে খাওয়া মানুষের। এর মধ্যেই আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরও বাড়বে।
অনেকেই গন্তব্যে রওনা হলেও পুরো পথ পাড়ি দিতে ব্যর্থ হয়ে একটু হাঁফ ছাড়তে গাছের ছায়ায় বিশ্রামে বসেন। ইটপাথরের নগরীতে জলাধারের দেখা পাওয়া সেখানে অসম্ভব, সেখানে পানির উৎসের খোঁজ পেয়ে তাতে গা ডুবানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ অনেকেই।
কেউ গরম থেকে নিষ্কৃতি পেতে পান করছেন পানিসহ নানা পানীয়। কেউ চুমুক দিচ্ছেন ডাবে। তবে ডাবের আকাশচুম্বী দামে অনেকের শরীরের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
স্বস্তির কোনো খবর নেই আবহাওয়ার অধিদপ্তরের কাছে। উল্টো বুধবার (২৪ এপ্রিল) তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে। আর আপাতত নেই বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাও।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ অবস্থায় সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে এসব কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাম্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, আবহাওয়ার যে অবস্থা, তাতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। বুধবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে গেলে তাপপ্রবাহ ধরা হয়। এ মুহূর্তে ৩৬ ডিগ্রির নিচে নামার সম্ভাবনা কম। ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস না ছাড়ালেও ইটপাথরের কারণে অনুভূত হচ্ছে সেরকমই।
এদিকে সোমবার (২২ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খুলনা-যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার (২১ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দক্ষিণের জনপদ যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এসআর