স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও বাঙ্গালী জাতিকে তাঁদের বাক স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। আজও স্বাধীন বাঙালি জাতিকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য নিত্য নতুন স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে বুকের তাজা রক্ত।
পাকিস্তানিদের কাছে নির্যাতিত – নিপীড়িত বাঙালি জাতি ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে পারলেও আজও তাঁদেরকে বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য গুম – খুন ও চলন্ত যানবাহনে পরিবার পরিজন নিয়ে আগুনে পুড়ে মরতে হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের পর মাঝে কিছু সময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হলেও অধিকাংশ সময় ক্ষমতাসীনরা জনগণের ভোটাধিকার হরণ বা গণতন্ত্রের লেবাসে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে।
স্বাধীন বীর বাঙালি তাই যখনই অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তখনই আমরা দেখেছি স্বৈরশাসকরা জনতার মিছিলে গাড়ী তুলে দিয়ে কিংবা পাখির মত গুলি করে বাঙালি জাতিকে হত্যা করে তাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছে। ৯০ এর দশকে রমনা থানা এলাকায় শেরাটন হোটেলের সামনে গাড়ীতে গান পাউডার দিয়ে জীবন্ত মানুষদের আগুনে পুড়িয়ে মারা থেকে ২০২৪ এ বেনাপোল এক্সপ্রেস নামক চলন্ত ট্রেনে মানুষকে পুড়িয়ে মারা এই জাতি চোখের জ্বলে প্রত্যক্ষ করেছে। বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য বিশ্বের মধ্যে একমাত্র এই অভাগা বাঙালি জাতিই মনে হয় সবচেয়ে বেশী আগুনে পুড়ে মরেছে।
তাই বাংলাদেশের গণতন্ত্রে আজ ‘ পোড়া লাশের গন্ধ’। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইরত এই দগ্ধ পোড়া লাশের উপর তথাকথিত গণতন্ত্রের জন্য আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ স্বাধীন করেনি।
পৃথিবীর বুকে সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে পরিচিতির জন্য আমাদের সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের কল্যাণমুখী ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বির্নিমানে এগিয়ে আসতে হবে।
লেখক ও গণমাধ্যম কর্মী
আবদুর রহিম
rahimmalekctg@gmail