একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় শক্তিশালী বিরোধী দল হচ্ছে ‘ছায়া সরকার ‘। তারা সংসদে ক্ষমতাসীন সরকারের গঠনমূলক আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারকে সহযোগিতার পাশাপাশি সরকারের যে কোন অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত বা জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে নেওয়া সরকারের পদক্ষেপের প্রতিবাদ করে থাকে গণতান্ত্রিক পন্থায়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোয় সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকলে রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্রে যেমন দুর্নীতি বাসা বাঁধতে পারে না তেমনি ক্ষমতাসীনরা যে কোন স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্রের গণতন্ত্র কাঠামো ধ্বংস করতে পারে না।
১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত – সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন, সার্বভৌমত্ব ও ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নামক যে রাষ্ট্র আমাদের উপহার দিয়েছিলেন সুষ্ঠু – নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিকবিদদের মতানৈক্যের কারণে সেই ‘ ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রের গণতন্ত্র আজ জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বক্ষণে জাতির দৃষ্টিগোছর হচ্ছে যে, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে কোন একটি রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতাসীন সরকারের সরকারের দয়া দাক্ষিণ্যে খয়রাতি ‘পার্লামেন্ট মেম্বার ‘ নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে তখন তারা কি করে শক্তিশালী বিরোধী দল হয়ে জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে?
বিগত বেশ কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনেও জাতি প্রত্যক্ষ করেছে ভিক্ষুকের মত হাত পেতে নেওয়া গৃহপালিত বিরোধীদলের খয়রাতি পার্লামেন্ট মেম্বাররা জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন সরকারের লেজুড়বৃত্তি আর তোষামোদ করা ছাড়া বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মানে কোন অবদানই রাখতে পারে নি বরং প্রতিবারের মতই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও হালুয়া রুটি খেতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের মতামতকে পদদলিত করে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে লাইফসাপোর্টে পাঠিয়ে দিয়ে নিজেদের আগের ঘোচাতে ব্যস্ত।
আমরা সাধারণ জনগণ আশাকরি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিকশিত হবে এবং বিশ্বের দরবারে আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নিজেদের তুলে ধরবো।
লেখক ও সাংবাদিক
আবদুর রহিম
rahimmalekctg@gmail.