শেরপুরের নকলায় নিখোঁজের দুদিন পর হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় আসাদুজ্জামান আসাদ (১৭) নামে এক অটোরিক্সাচালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওইসব কথা জানান।
আটককৃত অটোরিক্সা চোর চক্রের সদস্যরা হচ্ছে নকলা উপজেলার ডাংধরাকান্দা গ্রামের মো. মজিবর মিয়ার ছেলে মো. হামিদুল ইসলাম খোকন (২৪), পূর্ব গজারিয়া গ্রামের মো. আবু হানিফের ছেলে মো. নূর নবী (২১), ধনাকুশা গ্রামের মৃত আশকর আলীর ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম এমসি জাহিদ (২২) ও ইশিবপুর গ্রামের মো. চান মিয়ার ছেলে মো. মিলন মিয়া (২৪)। আর নিহত ইজিবাইক চালক আসাদ দক্ষিণ নকলা এলাকার মোহাম্মদ ফজলুর করিমের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান,আজ ভোর ৪ ঘটিকার সময় নালিতাবাড়ী থানাধীন তিনআনি বাজারস্থ এলাকায় পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা কালে এসআই মুকুল সরকার, নালিতাবাড়ী থানা অটোরিক্সা চোর সন্দেহে মো. হামিদুল ইসলাম খোকন (২৪) ও মো. নুর নবী (২১) নামে ২ (দুই) জন ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা একেক সময় একেক ধরনের তথ্য প্রদান করতে থাকলে সন্দেহ আরও ঘণীভূত হতে থাকে। অটোরিক্সা উদ্ধার এর খবর পেয়ে নকলা থানার বাসিন্দা মো. ফজলুর করিম নালিতাবাড়ী থানায় ছুটে আসেন। তিনি অফিসার ইনচার্জ নালিতাবাড়ী থানাকে অবহিত করেন যে, তার ছেলে অটোরিক্সা চালক আসাদুজ্জামান আসাদ (১৭) ১১মার্চ তারিখ অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়ে অদ্যবধি ফিরে আসেনি।
এ ঘটনা জানতে পেরে অফিসার ইনচার্জ, নালিতাবাড়ী মো. ফজলুর রহমান কে উদ্ধারকৃত অটোরিক্সাটি তার ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ এর বলে সনাক্ত করেন। পরবর্তীতে চোর সন্দেহে আটককৃত মো. হামিদুল ইসলাম খোকন (২৪) এর নিকট হতে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন ভিকটিম এর পিতা মো. ফজলুর রহমান কে প্রদর্শন করলে তিনি মোবাইল ফোনটিও তার ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ এর বলে সনাক্ত করেন। পরবর্তীতে আসামীদের আরও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এক পর্যায়ে তারা দু’জনসহ মো. জাহিদুল ইসলাম এমসি জাহিদ (২২) ও মো. মিলন মিয়া (২৪) মিলে আসাদুজ্জামান আসাদকে অটোরিক্সা ছিনতাই করতে বাধা দেয়ায় হত্যা করে লাশ গুম করার বিষয়টি স্বীকার করে।
তারা জানান, অটোরিক্সা ছিনতাই করার জন্য ইং ১১মার্চ রাত অনুমান ০৯:০০ ঘটিকার দিকে নকলা থানা এলাকায় পৌরসভাধীন নালিতাবাড়ী মোড় হতে অটোরিক্সাটি ভাড়া নেয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে রাত অনুমান ১০:৪০ ঘটিকার দিকে নকলা থানাধীন ধনাকুশা (নকলা টু নালিতাবাড়ী পাকা রাস্তা) ছেফাকুড়ি ব্রীজের ২০০ গজ পূর্ব দিকে নিয়ে ভিকটিম এর অটোরিক্সা ছিনতাই করার চেষ্টা করে। ছিনতাই করার সময় ভিকটিম বাধা দিলে তাকে অভিযুক্ত ০৪ (চার) জন মিলে ভিকটিমকে হত্যা করে তার লাশ লুকানোর জন্য জনৈক খোকা মিয়ার ভরাটকৃত জমিতে মাটি চাপা দেয়।
পরবর্তীতে ছিনতাইকৃত অটোরিক্সাটি বিক্রির উদ্দেশ্যে তিনআনী হয়ে যাওয়ার পথে অটোরিক্সার চার্জ শেষ হলে নালিতাবাড়ীর বিশেষ টিম এর নিকট আটক হয় দুইজন। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ আরো দুইজনকে আটক করে এবং ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় নকলা থানায় ভিকটিম আসাদের বাবা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আটক আসামিদের বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।