সরিষা ও গম চাষের পাশাপাশি বিকল্প ফসল হিসেবে সূর্যমুখী চাষের দিকে ঝুঁকছেন ত্রিশাল উপজেলার কৃষকেরা। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উপজেলায় সূর্যমুখীর বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় সূর্যমুখী থেকে ভালো ফলনে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকেরা। আলিম পরীক্ষা দিয়ে হাতে কোনো কাজ না থাকায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের সতেরপাড়া গ্রামের শিক্ষার্থী মো. রাজীব হাসান (২০) কোচিং শিক্ষকের পরামর্শে ছোট ভাই দাখিল পরীক্ষার্থী রেজাউল করিমকে (১৮) সঙ্গে নিয়ে ২০ শতক জমিতে শুরু করে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। জীবনের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সফলতা পায় এই দুইভাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সূর্যমুখী চাষে বদলে গেছে আশপাশের দৃশ্যপট। দৃষ্টিনন্দন হলদে সূর্যমুখী বাগানের ফুলগুলি যেন সূর্যের দিকে তাকিয়ে হাসছে। তা দেখে আশপাশের কৃষকেরা অবাক। এতে সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে চাষ করা এই ফসলের বাণিজ্যিক ব্যবহার সর্ম্পকে এখনও অজ্ঞ এই তরুণ চাষিরা। এক্ষেত্রে ফসল বিক্রি ও মাড়াইয়ে কৃষি অফিসের সহযোগিতা আশা করছেন তারা।
সূত্র জানায়, ভোজ্যতেল হিসেবে সয়াবিনের একক আধিপত্যের বাজারে। সেই সঙ্গে সয়াবিন তেলের তুলনায় কম কোলেস্টেরল এবং সহজেই চাষ উপযোগী হওয়ায় সূর্যমুখী আবাদ অনেকটাই লাভজনক। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে ৭ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। এতে কৃষি পুনর্বাসন প্রণোদনার আওতায় কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে এক কেজি করে আরডিএস জাতের সূর্যমুখীর বীজ বিতরণ করার পাশাপাশি হাতে-কলমে কৃষকদের বীজ আহরণ পদ্ধতি শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সূর্যমুখী চাষি আলিম পড়ুয়া শিক্ষার্থী রাজীব হাসান বলেন, আমি দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার পর বেশ কিছুদিন সময় পেয়েছিলাম তখন আমার কোচিং শিক্ষক আব্দুল্লাহ ফাহাদ স্যার আমাকে অনুপ্রেরণা দেয় সূর্যমুখী চাষ করতে। এরপর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিশাত মাহবুবা রহমান আপার পরামর্শ নিয়ে আমি ও আমার ছোটভাই ২০ শতাংশ জমিতে এই ফুলের চাষ করেছি। এখন ফলন দেখে আমরা খুশি।
এ বিষয়ে উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিশাত মাহবুবা রহমান বলেন, আগে কৃষকেরা সূর্যমুখী চাষে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। আমাদের চেষ্টায় এখন তারা সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে বিনামূল্যে বীজ দেওয়া থেকে শুরু করে চাষাবাদে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাই সূর্যমুখী চাষ দিনি দিন বাড়ছে।