ময়মনসিংহের নান্দাইলে এবছর থাই ও বল সুন্দরী কুল বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন এবং বাজার দর পেয়ে সাফল্যের হাসি ফুটেছে নান্দাইলের কৃষক রুহুল আমিনের মুখে।
তার বাগানে বপনকৃত ৮ মাসের চারা গুলোতে ঝুলছে প্রচুর পরিমাণে বরই। বরইয়ের ভারে নূয়ে পড়ছে গাছ। সবগুলো গাছে বাঁশ দিয়ে আড়া ও মাচা তৈরি করে দিয়েছেন। প্রতিটি গাছ ১০ থেকে ১৫ ফুট লম্বা হয়েছে। প্রতিটি গাছের নিচ থেকে উপর পর্যন্ত থোকায় থোকায় ঝুলছে,থাই ও বল সুন্দরী কুল। বরইয়ের ওপরের অংশে দেখতে হালকা সিঁদুর রং এবং আকারে বেশ বড়। দেখতে যেন ঠিক আপেলের মত।
সারজমিনে নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের তেলিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন এর বিভিন্ন ফলের মিশ্রিত বাগানে গিয়ে দেখা যায় থাই ও বল সুন্দরী কুলের গাছগুলোতে ঝুলছে প্রচুর পরিমাণে বরই। পাতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বরই যেন বিছানা পেতে রয়েছে। তার মধ্য বল সুন্দরী কুল দেখতে অনেকটা মাঝারি সাইজের আপেলের মত। রং আপেলের মত সবুজ ও হালকা হলুদের উপর লাল।
উদ্যোক্তা রুহুল আমিন জানান, গত ২০২২ সনে ১০শতক জমিতে বল সুন্দরী ৩১ টি, ও ২০২৩ সনে ফাল্গুন মাসে আরো ৪০ শতাংশ জমিতে থাইকুল ২৭০ টি মোট ৫০ শতক জমিতে ৩০১ টি গাছ রোপন করেছেন। চারা রোপনের ৮ মাসের মধ্যেই গাছগুলোতে ফলে ভরপুর হয়ে উঠেছে।
বর্তমান বাজারে এই বরইয়ের ব্যাপক চাহিদা দামেও বেশ ভালো। প্রতি কেজি বরইয়ের পাইকারি দর১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। চলতি মৌসুমী প্রতিটি চারা থেকে ৪০ থেকে ৬০ কেজি বরই তুলে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। আশার তুলনায় অনেক বেশি ফলন হয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারবেন বলে জানান রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, বরই চাষে সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার মত খরচ হবে। আশা করছি নিজেরা খাওয়ার পরেও পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকার বরই বিক্রি করতে পারব।
এছাড়া তিনি ২০ শতক জমিতে আম রুপালি, খাঁটি মন, কেজিফোর, লিচু থ্রি চায়না, সিটলেস লেবুসহ পতিত জাগায় বিভিন্ন ফলস ঔষধী গাছ রোপন করেছেন। তার এ ধরনের উদ্যোগ দেখে চাষাবাদের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন আশপাশের এলাকার বেকার যুবকেরা। চাষাবাদে এ ধরনের উদ্যোক্তা যুবকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান রুহুল আমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, নান্দাইলে ২ হেক্টর পরিমাণ জমিতে বরই চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে এক হেক্টর জমিতে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি কুল বাগান রয়েছে।
তিনি জানান, বরই চাষে তুলনামূলক কম খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। পতিত জমি ফেলে না রেখে এমন জমিতে বরই গাছ রোপন করলে বাড়তি আয় করা সম্ভব।