নওগাঁয় পৃথক অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজ চক্রের ৩৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫।
শনিবার দুপুরের দিকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় র্যাবের বিশেষ দল যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সড়কে বিভিন্ন যানবাহনে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার সকালে র্যাব-৫, রাজশাহী কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগে শনিবার দুপুরে র্যাব-৫, রাজশাহীর সদর কোম্পানী ও সিপিএসসি যৌথভাবে নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালায়। অভিযানে শহরের বালুডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড থেকে জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ধঞ্জইল বরুজান গ্রামের মো আব্দুল মজিদের ছেলে মূলহোতা সোহেল মৃধা (৩৫), হর্শিউজানি গ্রামের মাজেদ আলী মন্ডলের ছেলে হাফিজুল ইসলাম (৩৫), দক্ষিণ লক্ষীপুর গ্রামের মৃত-নরেন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে সুর্যকান্ত সরকার (৩৮), বাগধানা দক্ষিণ পাড়ার মত- মশর উদ্দিন মন্ডলের ছেলে আতোয়ার (৪৫), সদর থানার হাঁপানিয়া একডালা এলাকার আবু জাকির হোসেনের ছেলে শিপন (৩২), বরুনকান্দি এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে আতোয়ার হোসেন (৩৪), আত্রাই থানার রসুলপুর গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে মামুন হোসেন (৪২), সদর থানার দিঘা এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে শামিম হোসেন (৪৫), চকপাথুরিয়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন (৩২), হাপানিয়া একডালা এলাকার মৃত হায়দার আলী সরকারের ছেলে পিন্টু রহমান (৪৪), চক বিরাম এলাকার মৃত অভির সরদারের ছেলে মজিদ সরকার (৫৮) ও শহরের তাজের মোড় হতে সদর থানার ভবানীপুর গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে আরিফ হোসেন (৩৫), তার সহযোগী শিমুলিয়া এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মুকুল হোসেন (৪৪), ভবানীপুর গ্রামের মৃত নছির উদ্দিনের ছেলে হারুন অর রশিদ (৬৪), হাট-নওগাঁর মোশারফ হোসেনের ছেলে আব্দুল মজিদ (৪২), বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার বশিপুর এলাকার মৃত ময়েজ উদ্দিন সরদারের ছেলে জুয়েল হোসেন (৪০), সদর থানার শিমুলিয়া এলাকার নাছিরের ছেলে সাজু (২৮), আরজি নওগাঁ (মন্ডলপাড়া) এলাকার মৃত আমজাদ মন্ডলের ছেলে ঠান্ডু মন্ডল (৪৫), হাট-নওগাঁর মঈন উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (৩৮), বর্ষাইলের শামছুল হকের ছেলে শাহিন আলম (৪৬), পার নওগাঁ (পুরাতন রেজিঃ অফিস পাড়া) এলাকার রতনের ছেলে রাকিব শেখ (২৮), পার নওগাঁ (ধোপাপাড়া) এলাকার মৃত সুবোধ রায়ের ছেলে সুমিত রায় (৩২), রামরায়পুর (ঋষিপাড়া) এলাকার গনেশ চন্দ্রের ছেলে সুজন কুমার (২২), হাট-নওগাঁ (কালিতলা) এলাকার মৃত ফনির ছেলে গোপাল দাস (৫২), আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা এলাকার মৃত শরিফ উদ্দিন মন্ডালের ছেলে আব্দুল লতিফ (৫২)।
অপরদিকে সদর থানার পাহাড়পুর গুড়ির মোড় হতে শহরের দয়ালের মোড় এলাকার জয়নুদ্দিনের ছেলে টিপু সুলতান (৫২), তাহার সহযোগী বরুনকান্দীর মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে মন্ডল ফিরোজ (৪০), উকিলপাড়া মৃত বাছের মিয়ার ছেলে মোস্তাক আহমদে (৫৩), পার নওগাঁর মৃত হোসেন আলীর ছেলে সুলতান আলম মিলন (৫০), বাছারী গ্রাম আয়াতুল ফকিরের ছেলে মঞ্জু (৫৯), পাহাড়পুর এলাকার মৃত জহির সরদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫৪), চকদেবপাড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে পলাশ (৪৪) এবং খাসনওগাঁর মৃত মাহবুবুল হোসেনের ছেলে সুমন হোসেন (৩৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮টি চাঁদা আদায়ের রশিদ বই, ২টি টালী খাতা এবং আদায়কৃত চাঁদার নগদ ১৫হাজার ৯২৫ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা রশিদ বই এর মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে থাকে এবং টালী খাতায় চাঁদার টাকার পরিমাণ ও চালকের নাম লিপিবদ্ধ করে রাখে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন ভাউচারের (রশিদ, টোকেন) মাধ্যমে সিএনজি, অটোরিক্সা এবং লেগুনাসহ বিভিন্ন যানবাহনে চাঁদাবাজি করে আসছিল। যদি কোনো চালক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এছাড়া বিভিন্ন সময় মারধর ও গাড়ী ভাংচুরও করে থাকে তারা। ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় পৃথক ৩টি চাঁদাবাজি মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
জানতে চাইলে নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল গফুর বলেন, আসামীদের গতকালই তিনটি মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৫ রাজশাহী ক্যাম্পের অধিনায়ক লে: কর্নেল মুণীম ফেরদৌস এসজিপি, পিএসসি, এসি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত এক মাস যাবৎ তাদের উপর নজরদারী রাখা হয়েছিল। এরপর অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
আল কোরাইশ রকি/নওগাঁ