মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, একটি মেয়ে একটি পরিবারের জন্য আশির্বাদ। একটি মেয়ে একটি জাতির জন্য অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি। একটি মেয়ে দু:খ-দূর্দশা-হতাশা-খারাপ অবস্থায় থাকা একটি অধ্যায় থেকে উত্তোরণের জন্য। তার কোমলমতি মন, তার সৃজনশীলতা এতোদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে যেটা কখনও একটি ছেলের পক্ষে সম্ভব হয় না।
আজ শনিবার (৯ মার্চ)সকাল ১০টায় পিরোজপুর জেলা সদরের করিমুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বিচিত্রা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমি আনন্দবোধ করি আমার একটি মেয়ে আছে। মেয়েই হচ্ছে বাবার কাছে অমূল্য সম্পদ। এজন্য আমি এখানে যে শিক্ষক মন্ডলী আছেন তাদের বলব, আমাদের কোলমতি মেয়েরা এদেরকে আদর্শ শিক্ষা শিক্ষিত করে গড়ে তুলুন। এরা যেনো ভবিষ্যতে স্বপ্ন দেখতে পারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবে। এরা বাংলাদেশের সংসদের সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন হবে। এরা বাংলাদেশের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দিপু মনি হবে।
এরা একদিন পিরোজপুরের গর্ব জাতীয় সংসদের উপনেতা অগ্নি কন্যা মতিয়া চৌধুরী হবে। এরা যাতে স্বপ্ন দেখতে পারে সচিব হবে, ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে, স্থপতি হবে, ডিসি হবে, ইউএনও হবে। আমারা যদি এদেরকে গড়ে তুলতে পারি, এরা যে উপহার জাতিকে দিতে পারবে সেটা কিন্তু অনেকে দিতে পারবে না।
মেয়েদের উদ্দেশ্যে এমপি বলেন, তোমরা জেনে রাখো গত তিন বছরে যতগুলো পরীক্ষার ফলাফল হয়েছে তাতে সবচেয়ে মেয়েরা কিন্তু ভালো রেজাল্ট করেছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে যে ছেলে মেয়েরা সুযোগ পেয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছে মেয়েরা।
যিনি প্রথম হয়েছে তিনি একজন মেয়ে। গত বছর বিসিএসএ প্রথম হয়েছে একটি মেয়ে। মেয়েদের ভিতরে সুপ্ত প্রতিভা আছে। কাজেই এই প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হবে। তোমার আমার মেয়ের সমতুল্য স্বপ্ন দেখবা অনেক বড় হতে হবে। স্বপ্ন দেখবা তোমার মা-বাবার যে আশা, তোমার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা, তুমি একদিন অনেক বড় হবে। কোন ভুল পথে পা বাড়াবে না। কোন ছেলে প্রলোভন দেখালে ওইটাকে রঙিন স্বপ্ন মনে করবে না। কোনভাবে মাদকাশক্ত হবে না। লক্ষ্য থাকবে তোমার শিক্ষকরা যে শিক্ষা দেয় সেটার দিকে। লক্ষ্য থাকবে আদর্শ চরিত্রবান হবে, নৈতিকতাকে ধারণ করবে। মূল্যবোধকে ধারণ করবে। সৎ জীবন-যাপন করার স্বপ্ন দেখবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে এমপি শ ম রেজাউল বলেন, মেয়েকে বোঝা মনে করে তারাতাড়ি বিয়ে দেয়ার প্রবনতার যেনো আপনাদের মাঝে সৃষ্টি না হয়। প্রত্যেকটা মেয়েকে বিকশিত হতে দেন। ওদের ব্যক্তি জীবন ওরাই বেছে নিতে পারবে। ওরা ভালো করে লেখাপড়ার পর আপনারাই তাকে ভালো পাত্র এনে দিতে পারবেন। কিন্তু আমার একটি কন্যা সন্তান যেনো পরিবারের ভুল সিদ্ধান্তে তার প্রতিভা বিকাশের আগেই যেনো তার প্রতিভা সমূলে গলা টিপে হত্যা করা না হয়।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শিরিনা আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আমীনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ মোর্শেদ মিশু, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইদ্রীস আলী আযিযী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট রাজ্জাক খান বাদশা, টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক কাজি মুজিবর রহমান, করিমুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম,সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।