বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাস্তবায়নের জন্য গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়নে অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের লক্ষ্যে “বার্ষিক গবেষণা পরিকল্পনা কর্মশালা-২০২৪” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৯ জুন) সকালে সাভারে অনুষ্ঠিত বিএলআরআই কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানটির শুভ উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর।
এ সময় সকাল ১১টায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত এবং পবিত্র গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে কর্মশালার সার সংক্ষেপ তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএলআরআই এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরিচালক (গবেষণা) ড. নাসরিন সুলতানা।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, কুরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশে চাহিদার তুলনায় বেশী পশু রয়েছে। তবে রাতের আধারে চোরাই পথে অনেক কিছুই ঢোকে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধে তাদের চেষ্টা করছে। গরু বা পশু আমদানি করার জন্য রাষ্ট্র কোন অবস্থাতেই কাউকে আইনগতভাবে বৈধ অধিকার দেয়নি। চোরাই পথে কেউ যদি কিছু করে তাহলে কারও কিছু করার নাই। তিনি আরো বলেন, কুরবানির ঈদে আমাদের ১ কোটি ৭ লাখ পশুর চাহিদা রয়েছে। তার বিপরীতে ১ কোটি ৩০ লক্ষ পশু তৈরী আছে।
উদ্বাধনী অনুষ্ঠানের পরে শুরু হয় কারিগরি অধিবেশন। কারিগরি অধিবেশনে আমন্ত্রিত বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দের মাঝে বিএলআরআই এর চলমান গবেষণা কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ গবেষণা পরিকল্পনা উপস্থাপনা করেন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তি পরীক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. রাকিবুল হাসান।
এসময় সরকারের বিভিন্ন অভীষ্ট ও লক্ষ্যমাত্রা, যেমন- রূপকল্প-২০৪১ ও দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভিলক্ষ্য, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, নির্বাচনী ইশতেহার প্রভৃতির আলোকে বিএলআরআই-এর চলমানা কার্যক্রমসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
উপস্থাপনার পরে বিশেষজ্ঞ সদস্যগণ ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন মেথডে নিজ নিজ ক্ষেত্র অনুযায়ী মোট ছয়টি অধিক্ষেত্রে বিভক্ত হয়ে বিএলআরআই এর গবেষণা কার্যক্রমকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে মতামত ও পরামর্শ ব্যক্ত করেন। ক্ষেত্রগুলো হলো- অ্যানিম্যাল অ্যান্ড পোল্ট্রি ব্রিডিং অ্যান্ড জেনেটিকস; অ্যানিম্যাল নিউট্রিশন, ফিডস অ্যান্ড ফডার ম্যানেজমেন্ট; অ্যানিম্যাল অ্যান্ড পোল্ট্রি ডিজিজ অ্যান্ড হেলথ; বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড ডেইরি রিসার্চ; এনভায়রনমেন্ট, ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এবং সোশিও-ইকোনোমিকস, ফার্মিং সিস্টেম রিসার্চ অ্যান্ড রিজিওনাল স্টেশনস অফ বিএলআরআই।
প্রতিটি ক্ষেত্রের আলোচনা পর্ব সমাপ্তির পরে গবেষণা অধিক্ষেত্র অনুযায়ী প্রাপ্ত পরামর্শসমূহ পৃথক পৃথকভাবে উপস্থাপন করা হয়। উক্ত পরামর্শসমূহ ও সুপারিশমালাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরবর্তী অর্থবছরে গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হবে।