ঢাকাSaturday , 27 July 2024
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দুর্গাপুরের চাষীরা

বাংলা ডেস্ক
নভেম্বর ২, ২০২৩ ৪:৩২ অপরাহ্ণ । ৯৫ জন
link Copied

উত্তর ময়মনসিংহের কৃষিনির্ভর উপজেলার নাম নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর। আশপাশের জেলার তুলনায় এখানে প্রায় সব ধরনের ফসলই ভালো হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ উপজেলায় দিন দিন বেড়ে চলেছে মাল্টার চাষ। মাল্টা চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এ উপজেলার চাষীরা।

আড়াই বছর বয়সী একেকটি গাছে দুই মণ পর্যন্ত মাল্টা ধরছে। গাছের বয়স ও আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাল্টার পরিমাণ ও স্বাদ বাড়তে থাকে। একেকটি মাল্টা গাছ ৩০-৪০ বছর পর্যন্ত ফল দিতে পারে। এবার পাইকারী বাজার দরে প্রতি মণ মাল্টা ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মাল্টার চাহিদা অনেক বেশি থাকায় এলাকার অনেকেই এখন মাল্টা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

চারিয়া মাসকান্দা এলাকার এমনই একজন চাষী এমদাদুল হক। ১ একর জায়গায় মাল্টার চাষ শুরু করে এ বছর বছর প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করছেন। তিনি জানান, এ বাগান করতে প্রাথমিকভাবে তার খরচ হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তার বাগানে একশত মাল্টার গাছ রয়েছে। প্রায় সবগুলোতেই ফল এসেছে। আগামী বছর ফলন বাড়বে। তাই আমার লভ্যাংশ দ্বিগুণ হয়ে যাবে, যা কয়েক বছরের মধ্যে চক্রাকার হারে কয়েক গুণ বাড়বে।

অপর চাষী নাইম বলেন, বাগান থেকে উৎপাদিত মাল্টা সরাসরি চলে যায় ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। উৎপাদিত মাল্টাগুলো এলাকার পাইকারী আরৎ থেকে বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। মানুষ এখনও দেশী মাল্টার ব্যাপারে ভালোভাবে জানে না। যদি জানতো, তাহলে ফরমালিন দেয়া বিদেশী মাল্টা না খেয়ে দেশী মাল্টাই খাইতো।

বিজয়পুর এলাকার সুমন চন্দ্র মল্লিক বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অনুপ্রেরনায় বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। প্রথম দফায় দুইশত চারা নিয়ে মাল্টার চাষ শুরু করি। এখন সবকিছু বদলে গেছে। কৃষি অফিস থেকে সবসময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এলাকার অন্যান্য যুবকরাও অন্য কিছু চাষাবাদের চেয়ে মাল্টা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

গুজিরকোনা এলাকার মশিউর রহমান বলেন, আমাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাল্টার বাগান করতে উৎসাহ পেয়েছি। সেখান থেকেই চারা ও সারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিনামুল্যে দিয়েছে। ১ একর জায়গার ওপর আমার বাগানটিতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা খরচ করলেও এ বছরে আমি ২ লাখ টাকার মতো মাল্টা বিক্রি করতে পারবো। আগামী বছর এটা কয়েক গুণ বাড়বে। প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিলে এসব গাছে ফুল আসে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ফল পাকে। পাঁচ-ছয়টা মাল্টা ওজনে এক কেজি হয়। এখানে একটি গাছে গড়ে ১৫০-২০০টি পর্যন্ত ফল ধরেছে।

দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিপা বিশ্বাস এ প্রতিনিধি কে বলেন, মাল্টা নিয়ে এ উপজেলার অপার সম্ভবনা রয়েছে। দুর্গাপুর উপজেলার প্রায় ২৫ একর জমিতে মাল্টার চাষ শুরু হয়েছে। বারি-১, ভিয়েতনাম এবং বাউ জাতের মাল্টা চাষ করা হচ্ছে এখানে। সীমান্ত এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকার মাটি মাল্টা চাষের উপযুক্ত হওয়ায় চাষীদের উদ্বুদ্ধ করে বিনামুল্যে মাল্টা চারা, সার ও প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। এনিয়ে অন্য ফলের চেয়ে মাল্টা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা।

টিএইচকে/এসআর