ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে পোশাক শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের জেরে গত কয়েক দিনের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আশুলিয়া থানায় ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। যার মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কারখানা কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার জনকে। ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বাকিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
শাহিদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনগুলো নিয়ে যে নাশকতা হয়, এদের মধ্যে বেশির ভাগই নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় শ্রমিক। তবে তাদের ভেতর ও বাইর থেকে কিছু লোক অসৎ উদ্দেশ্য সফল করার চেষ্টায় থাকে, আমরা তা প্রতিরোধে গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে দোষিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তে আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখেই পুলিশ কাজ করছে।
রোববার সকালে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় গিগে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখছেন কয়েকজন পোশাক শ্রমিক। আবার অনেকেই বন্ধের নোটিশ দেখে বাড়ি ফিরে গেছেন।
বেরণ এলাকার এনভয় গ্রুপের মানাটা গার্মেন্টসের শ্রমিক জুয়েল রানা বলেন, গতকাল কারখানার সামনে এসে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে বাসায় ফিরে গেছি। আজও এসে দেখি কারখানা বন্ধ। কবে খুলবে তাও জানি না। সারা দিন কাজ করে অভ্যাস, তাই বাসায় বসে থাকতেও ভালো লাগে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভারের আশুলিয়ায় আজও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ৬০টি পোশাক কারখানা বন্ধ আছে। যেখানে গতকাল শনিবার সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে মোট বন্ধ কারখানার সংখ্যা ছিল ১৩০। খোলা কারখানাগুলোর মধ্যে ৮ থেকে ১০টি কারখানার শ্রমিকেরা সকালে কারখানায় এসে কার্ড পাঞ্চের পর কাজ না করে বসে ছিলেন। পরে কিছু সংখ্যক শ্রমিক কারখানা থেকে চলে যান। শ্রমিকদের অনেকে কারখানায় কাজ না করে বসে ছিল। এছাড়া কাজ না করায় কয়েকটি কারখানায় আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দিচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি ডিবি, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।
ওএফ/এসআর