ঢাকাSunday , 5 May 2024

একুশ আমার অহংকার

রবিউল ইসলাম
ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪ ৪:১৫ অপরাহ্ণ । ১৭৮ জন
link Copied

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?’ আসলেই কি ভোলা যায়? কখনোই যায় না। হে একুশ, হে প্রাণের একুশ তোমাকে কীভাবে ভুলি? তুমিই যে আমার শেকড়, তুমিই যে বাঙালির শেকড়। পৃথিবীতে কোন জাতি মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদাইয়ে জীবন দিয়েছে? কেউ দেয়নি। কিন্তু বাঙালি দিয়েছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে পুলিশের গুলির মুখে একে একে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউর, বরকতেরা। তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষা, বাংলা ভাষা, আমরা পেয়েছি টুকটুকে লাল-সবুজের বাংলাদেশ।

২১ শুধুই একটি সংখ্যা বা একটি দিন নয়। একুশ মানে শেকড়। একুশ মানে অস্তিত্ব। একুশের পথ বেয়ে এসেছে চুয়ান্নর সাধারণ নির্বাচনে পাক-শাসকদের ভরাডুবি, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে বাঙালির বিপুল বিজয়, সবশেষে একাত্তরের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। বাংলার আকাশে বিজয়ের রক্তিম সূর্য। একুশ মানে মুক্তি। একুশ মানে জয়গান। একুশ মানে অহংকার। বাঙালির অহংকার।

২১ ফেব্রুয়ারি, জাতীয় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশ্ববাসী এদিন বাঙালি জাতিকে স্মরণ করে যার যার মাতৃভাষাকে সম্মান জানায়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি জাতীয় শোক দিবস আর জাতীয় শহিদ দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। একই পথ পরিক্রমায় ২০০০ সাল থেকে এ দিনটিতেই বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

এই সেই একুশ, যে ফিরে ফিরে আসে। কখনো কবিতা, কখন গান, কখনো সংগ্রাম হয়ে। নীরবে বলে যায় শত কথা। খুলে দেয় ইতিহাসের ঝাঁপি। মনে করিয়ে দেয়- সেই ইতিহাস ভুলে যেও না। সেই শপথ ভুলে যেও না। রক্তে ভেজা পথ মাড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা বীরদের ভুলে যেও না, হৃদয়জমিনে আগলে রেখো তাদের। হ্যাঁ, অনেক সময় আমরা ভুলে যাই। আমরা ভুল করি। তবে ২০২৪-এর এই দিবসে আমরা নতুন শপথ নিই। পূর্বপুরুষের এনে দেওয়া উপহার এই মাতৃভাষাকে সমুন্নত রাখি। সঠিক ব্যবহার করি। আমাদের উত্তরসূরীদের জাগ্রত করি। তাদের হৃদয়ে গেথে দেই মাতৃভাষার ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস। একুশের ইতিহাস।

এসআর