ঢাকাSaturday , 27 April 2024

`বিএনপি ভোট বর্জনের কর্মসূচির নামে যা করছে তা রাষ্ট্রবিরোধী’

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩ ৬:২১ অপরাহ্ণ । ৯১ জন
link Copied

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (গোয়েন্দা) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, বিএনপি ভোট বর্জনের কর্মসূচির নামে যা করছে তা দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী। তারা যে লিফলেট বিতরণ করছেন সেখানে বলা হচ্ছে, সরকারকে সব ধরনের ট্যাক্স, ইউটিলিটি বিল দেওয়া বন্ধ করতে। তারা একদিকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে নাশকতার কাজ করছেন। তাদের এ অপপ্রচার সংবিধানবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী এবং গণতন্ত্রবিরোধী। এ প্রচেষ্টা বন্ধের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ বদ্ধপরিকর।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল (৩২) এবং কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদি হাসান পলাশসহ (৪৩) ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ঘটনায় রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে পশ্চিম ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ডিবি রমনা ও লালবাগ বিভাগের একাধিক টিমের অভিযানে তাদের হেফাজত থেকে নির্বাচন বর্জন, সব রকমের ট্যাক্স, সেবার কর পরিশোধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান সম্বলিত দুই হাজার লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, ১০ হাজার নির্বাচনবিরোধী লিফলেট, গানপাউডার ও ককটেলসহ গ্রেফতার ১১ জনের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট ও বিস্ফোরক আইনের একাধিক ধারায় মামলা হয়। এরপর পশ্চিম ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাজমুল হুদা ওরফে রাকির (২৬), রাসেল মিয়া (২৭), নাহিদ হোসেন (৩৩) এবং বিকাশ কুমার শীলকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়।

তাদের মধ্যে নাজমুল হুদা রাকিব ছাত্রদল তেজগাঁও কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাসেল ও নাহিদ নির্মাণ শ্রমিক এবং যুবদল কর্মী। বিকাশ কুমার শীল প্রিন্টিং দোকানে কাজ করেন। ট্যাক্স, সেবা, কর পরিশোধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান সম্বলিত লিফলেট পশ্চিম ধানমন্ডির ‘ডিজাইন রুম’ নামের দোকানে প্রিন্ট করা হয়েছে। ওই দোকান থেকে প্রিন্টিং মেশিন, ফটোকপি মেশিন ও প্রিন্টার জব্দ করা হয়েছে।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতার ছাত্রদল নেতা এবং যুবদল কর্মীরা স্বীকার করেছেন যে নগদ টাকা, দলীয় পদ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ভোলা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক ও তরুণদের নিয়ে আসা হয়। এরপর যুবদল এবং ছাত্রদলের বেশকিছু সিনিয়র নেতার তত্ত্বাবধানে ঢাকার ওয়ারী, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে ঝটিকা মিছিল, মশাল মিছিল, ভাঙচুর, আগুন দেওয়া, বিস্ফোরণ ঘটানোসহ নির্বাচনবিরোধী লিফলেট ছাপানো এবং বিতরণের কাজ করানো হতো। ওই সিনিয়র যুবদল এবং ছাত্রদল নেতাদেরও খোঁজা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য দায়বদ্ধ। বিএনপি’র নেতাকর্মীরা যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমা বিস্ফোরণ, রেলের বগিতে আগুন দেওয়া, রেলের স্লিপার চুরি করে দুর্ঘটনায় ফেলে দেওয়ার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে তারা সফল হতে পারেনি। এ ব্যর্থতা ঢাকার জন্য নানান রকমের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জনগণকে নির্বাচন কেন্দ্রে না আসতে কুমন্ত্রণা দিয়ে লিফলেট বিতরণ করছে।

রিজভীকে খুঁজছি, শিগগিরই গ্রেফতার

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অসুস্থ জানতাম। তিনি অনেক মামলার আসামিও। অথচ তিনি নির্বাচনবিরোধী প্রচারে জড়িয়েছেন। তাকে খোঁজা হচ্ছে। শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

ডিবিপ্রধান বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা ছিল, তেমন অনেক বড় বড় নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রুহুল কবির রিজভীকে খোঁজা হচ্ছে, তাকেও শিগগির আইনের আওতায় আনা হবে।

রিজভীকে উদ্দেশ্য করে ডিবিপ্রধান বলেন, একজন অসুস্থ মানুষ একটু পর পর আন্দোলন ও নির্বাচন বানচালের ঘোষণা দেয়। অসুস্থ মানুষ কীভাবে এসব করেন। যদি তিনি সত্যিই অসুস্থ হয়ে থাকেন, তা হলে আদালতে গিয়ে হাজিরা দিতে পারেন।

এসআর