আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকায় ভোট দিলেই উন্নয়ন হয়। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। কারো এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী যাতে না থাকে তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছি যাতে আপদ কালিন সময়েও খাদ্য ঘাটতি না হয়। কৃষি উপকরণ দিচ্ছি ভর্তুকী দিয়ে। মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ভূমিহীনদের ভূমি আর গৃহহীনদের ঘর দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় মাদারীপুরের কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামীলীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি ভাষনে বলেন, ‘আমরা দিনবদলের সনদ দিয়েছিলাম। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল দিকে আজ বাংলাদেশ উন্নয়ন করেছে। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, আমাদের লক্ষ্য ২০৪১। এই ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের অগ্রগতি। আমরা সেই তারুণ্যকেই স্মার্ট তরুণ সমাজ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়তে চাই। ‘আমরা একটা স্মার্ট পপুলেশন। কারণ আমাদের লক্ষ্য আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’ আমাদের সরকার হবে স্মার্ট, আমাদের ইকোনমি হবে স্মার্ট, আমাদের সমাজ হবে স্মার্ট।’
তিনি বলেন, শিক্ষা-দীক্ষায় এ দেশের জনগণ যেন প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে পারে। আর আজকের তরুণরাই হবে ২০৪১ সালের সৈনিক। তারাই চালাবে এই দেশ। সেভাবেই নিজেদের তৈরি করে তুলতে হবে।
নতুন ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা এবার প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছে তাদের আমি অনুরোধ করবো, নৌকা মার্কায় ভোট দিতে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
এসময় তিনি সবাইকে আবারো নৌকায় ভোট চেয়ে বলেন, মাদারীপুরে আমাদের যারা প্রার্থী তাদের ভোট দেবেন। আমি নৌকা মার্কায় ভোট চাই। কারণ, নৌকাই উন্নয়ন, নৌকাই দেবে সব। নৌকা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। এই নৌকা নূহু নবীর নৌকা। যে নৌকা মহাপ্লাবন থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই নৌকাই বাংলাদেশের উন্নয়নের একমাত্র হাতিয়ার।
নির্বাচনী জনসভায় মাদারীপুর-১ মাদারীপুর-২ ও মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী নূর ই আলম চৌধুরী লিটন, শাজাহান খান ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপকে মঞ্চে দেখিয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতেও বলেন তিনি।
এ সময় কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যাণ্যেরে মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, পৌর মেয়র এস.এম হানিফ, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সরদার লোকমান হোসেন সহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জনসভার মাঠ সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সড়ক জুড়ে তোরণ ও আর ব্যানার পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর এই জনসভা দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তনে আরো ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন এ জনপদের মানুষ।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী আগমন উপলক্ষে জনসভার স্থান ও আশেপাশের অনেক এলাকাই ছিলো নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। গনমাধ্যম ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার ছিলো সীমিত। ব্যানার, পোস্টার আর তোরণে অপরুপ সাজে ছেঁয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, মাদারীপুর-৩ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮শ ৫৬ জন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ বিভিন্ন দলের ৮ প্রার্থী।