খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এক কেজি চালও আমদানি করতে হয়নি। বরং উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হয়েছে। এখন আমরা অনায়াসে ৫-৭ লাখ টন চাল রফতানি করতে পারি, সে অবস্থা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের শুধু পালিশ করে যে চাল নষ্ট হচ্ছে সেটা অর্ধেক রপ্তানি করলেই হবে। কারণ উৎপাদিত প্রায় চার কোটি টনের মধ্যে তিন শতাংশ হারে প্রায় ১২ লাখ টন চাল পালিশ করার কারণে অপচয় হচ্ছে। আমাদের চাল পাঁচ দফা পালিশ করে চকচকে করা হচ্ছে। দুবার পালিশ করলেও ৫-৭ লাখ টন চাল বাড়বে।
তিনি বলেন, দফায় দফায় পালিশ করার পর চালের মধ্যে শুধু কার্বোহাইড্রেট ছাড়া অন্য কোন পুষ্টি থাকছে না। এতে খরচ হচ্ছে বিদ্যুৎ , শ্রমিকের মজুরি সবকিছু মিলে প্রতি কেজিতে প্রায় চার টাকা। যে ভার ভোক্তাকে বহন করতে হচ্ছে। চালের দামে এ খরচ যুক্ত হচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন আইন করে এ পালিশ বন্ধ করছি, মিনিকেট বা বিভিন্ন নামে চাল বাজারজাত করাও বন্ধ করেছি। ভোক্তাদের আমি বলব, আপনারা চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করুন। তাহলে যেমন চালের দাম কমবে, আমরা চাল রপ্তানি করতেও সফল হব। এ আইন কার্যকর হওয়ার পর আগামী আমন মৌসুম থেকে চাল পালিশ করলে মিলমালিকরা জরিমানার শিকার হবে। আসুন সকলের প্রচেষ্টায় আমরা চাল রপ্তানির প্রস্তুতি নেই।
এদিকে দেশে এক অঙিনায় খাদ্য, কৃষি যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও স্বাস্থ্য পর্যটন নিয়ে ওই আটটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ এর আয়োজনে তিনদিনের এ আয়োজন চলবে শনিবার পর্যন্ত।খাদ্যমন্ত্রী এসব প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
একযোগে শুরু হওয়া এসব প্রদর্শনী হচ্ছে, ৭ম ফুড বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ৪র্থ ফুড প্যাক এক্সপো, ৭ম এগ্রো বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো এবং ৭ম পোল্ট্রি অ্যান্ড লাইভস্টক বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ১৫তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ১০তম ফার্মা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ৮ম বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল ল্যাব এক্সপো এবং ৭ম ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ট্যুরিজম অ্যান্ড সার্ভিসেস এক্সপো বাংলাদেশ।
কৃষি ও প্লাস্টিক শিল্প জগতের অত্যাধুনিক সরঞ্জাম, উন্নত প্রযুক্তি, পণ্য এবং পরিষেবা বিষয়ক এ প্রদর্শনীসমূহে বাংলাদেশ, তুর্কিয়ে, ভারত, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা ও চীনসহ ১৫টিরও অধিক দেশের প্রায় ১০০টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ও সেবা নিয়ে স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান, দেশি-বিদেশি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সহযোগিতা বিষয়ক এ প্রদর্শনীসমূহে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, তুর্কিয়ে, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও শ্রীলংকাসহ ১৫টিরও অধিক দেশের প্রায় ১১২টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ।
আগামী ৯ মে থেকে ১১ মে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ব্যবসা সংশ্লিষ্ট দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনীগুলো উন্মুক্ত থাকবে।