জাতীয় পার্টিকে জোটে রাখায় দীর্ঘদিন লাঙলে ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেই লালমনিরহাট-১ (সদর উপজেলা) আসনে এবার নৌকা মার্কার প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নেতাকর্মীদের কাজ করতে বললেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে লালমনিরহাট সহ দেশের ৫ টি জেলার জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ভাষণ দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তাঁর ভাষণ শেষে একে একে পাঁচ জেলার মধ্যে প্রথমে পঞ্চগড় এরপর লালমনিরহাটের নেতাদের সাথে কথা বলেন তিনি।
এ সময় জেলার নেতাদের পক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লালমনিরহাট-১ আসনের নৌকার প্রার্থী এ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বক্তব্য দেন। তিনি বক্তৃতায় বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসী কর্তৃক নিহত শহীদ শামসুজ্জামান সুরুজ, শহীদ সোহেল, শহীদ জাহাঙ্গীরের রক্তভেজা মাটি লালমনিরহাট থেকে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আপনার জন্য আগাম অভিনন্দন রইল, আগামী সংসদ নির্বাচন শেষে টানা চতুর্থবার এবং মোট পঞ্চমবারের মত আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন সেজন্য আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই কারন আপনি দীর্ঘ ৬৭ বছরের বন্দী দশা থেকে ছিটমহল বাঁশি কে মুক্তি এনে দিয়েছেন আমরা স্লোগান দিয়েছি মুজিব দিয়েছে চুক্তি হাসিনা দিয়েছে মুক্তি। সেই ছিটমহলগুলোতে আজ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে সে জন্যও আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। লালমনিরহাটের মত জেলায় এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মতিয়ার রহমান বলেন, বুড়িমারী থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর কথা ছিল, যার সবকিছুই তৈরি আছে সেই ট্রেনটা চালুর দাবী জানাই।
এ্যাডভোকেট মতিয়ার শেখ হাসিনা সরকারের হাতে তিস্তা সড়ক সেতু, দ্বিতীয় ধরলা সেতু দ্বিতীয় তিস্তা সেতু (মহিপুর-গঙ্গাচড়া সেতু) হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, তিস্তা নদী খনন করে দুই তীরে বাঁধ দিয়ে যে মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে তার বাস্তবায়ন শেখ হাসিনা সরকারের হাত ধরেই হোক এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মতিয়ার রহমান জেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার স্থানীয়দের দাবীও তুলে ধরেন।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মতিয়ার রহমানের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, লালমনিরহাটে একটা সময়ে কিছুই ছিল না, আমরা সরকারে আসার পর একটার পর একটা সেতু-সড়ক নির্মাণ করেছি। উত্তরের মঙ্গার দিন আর নেই। যেসব উন্নয়ন হয়েছে তা আগের সরকারের কেউ করতে পারেনি। এখন লালমনিরহাটে নৌকা মার্কার প্রার্থী দিয়েছি, আপনারা তাঁকে বিজয়ী করুন।
কালেক্টরেট মাঠে আয়োজিত এ জনসভার সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোতাহার হোসেন। জনসভা সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লালমনিরহাট-৩ আসনের প্রার্থী এ্যাভোকেট মতিয়ার রহমান। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি। এছাড়াও, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুজ্জামান আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য এ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমীসহ লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামের জেলার নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন অংগ ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত পঞ্চাশ হাজার নেতাকর্মী জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরের পর থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী জনসভাস্থলে মিছিল নিয়ে জড়ো হয়। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল নৌকার ব্যানার পোস্টার ফেস্টুন।
লালমনিরহাটের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা শেষে শেখ হাসিনা নাটোর জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন।
এমএস/এসআর