`জিথ্রিন' সিরাপ, এটি এজালাইড এন্টিবায়োটিক। যা শিশুদের খাওয়ানো হয়। এমন স্পর্শকাতর ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবরে। তার পরেও বিক্রির জন্য দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। শুধু একটি ওষুধই নয় মাত্র ১০ মিনিটের তদারকিতে এমন ৩৩ প্রকারের মেয়াদোত্তীর্ণ বিপুল পরিমাণে ওষুধ পায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাজধানীর কামরাঙ্গিরচরের রনি মার্কেট এলাকার ‘সাবিহা মডেল ফার্মা’র এমন অপরাধ দেখে হতবাক ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার কামরাঙ্গিরচর এলাকায় অভিযানে যায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান, সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফারহানা ইসলাম অজন্তা।
অভিযানে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি তাকেই মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছে সাবিহা মডেল ফার্মা। অল্প সময়ের তদারকিতে ৩৩ প্রকারের বিপুল সংখ্যাক মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পায় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এসব ওষুধের মধ্যে বেশকিছু ওষুধ পাওয়া যায় যা শিশুদের খাওয়ানো হয়। এমন গুরুত্বর অপরাধে ভোক্তা অধিকার আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পরে পাশের ডে নাইট নামের আরও একটি ফার্মেসীতে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। সেখানেও প্রায় ২৩ প্রকারের মেয়াদহীন বিপুল পরিমাণে ওষুধ পায়। এই প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে জব্বার মণ্ডল বলেন, এই দুটি ফার্মেসীতে বিপুল পরিমাণে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ করে রাখার প্রমাণ পেয়েছি। অল্প সময়ে সাবিহা মডেল ফার্মাতে ৩৩ প্রকারের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাই। যার মধ্যে বাচ্চাদের এন্টিবায়োটিকও রয়েছে। ডে নাইট ফার্মেসীতে ২৩ প্রকারের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে। আমরা দুজন কর্মকর্তা মাত্র ২০ মিনিটে এতোগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বের করেছি। অথচ যারা এসব ফার্মেসীতে কাজ করে তারা দীর্ঘ সময় অবস্থান করে। তাদের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খুজে বের করা খুব কঠিন নয়। আমাদের কাছে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ফার্মেসীগুলো স-জ্ঞানে অথবা অ-জ্ঞানে এসব মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, এসব মেয়াদহীন ওষুধ যারা গ্রহণ করবেন তাদের রোগ ভালো হওয়া তো দুরের কথা আরও নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
ভোক্তা অধিকার বিরোধী অপরাধে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং প্রাথমিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এমন অপরাধ করলে আরও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই দুই প্রতিষ্ঠানকে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
ভোক্তাদের উদ্দেশ্য করে জব্বার মণ্ডল বলেন, ওষুধ ক্রয় করার আগে অবশ্যই দেখে নিবেন মেয়াদ আছে কি না। এবং যারা ফার্মেসী ব্যবসায়ী রয়েছেন তাদের উচিত নিয়মিত চেক দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খুঁজে বের করা। অবশ্যই সেগুলো আলাদা একটি বক্সে রাখতে হবে। এবং সেই বক্সে লিখে দিতে হবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, যা বিক্রির জন্য নয়।
এনপি