আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনার ভোট আপনি দেবেন, কেউ যেন ঠেকাতে না পারে। বিএনপির বিষয়ে সবসময় সজাগ থাকতে হবে। এরা মানুষের ক্ষতি করতে চায়। এরা মানুষকে ভোটদানে বিরত রাখতে চেষ্টা করছে।
সোমবার রাজধানীর কলাবাগান মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ জনসভায় বিকেল ৩টা ১৭ মিনিটে মঞ্চে উপস্থিত হন তিনি। সেখানেই প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা নির্বাচনে হেরে যাবে বলে ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশিদের ধর্না ধরছে। আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে। নির্বাচন বন্ধ করবে এতো সাহস তাদের নেই।
নির্বাচন কমিশনকে আমরা স্বাধীন করে দিয়েছি। কারণ, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। যেহেতু গণতন্ত্র অব্যাহত রয়েছে, তাই মানুষ শান্তিতে আছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। তাই আমাদের ভোট চুরির প্রয়োজন হয় না। আমরা (আওয়ামী লীগ) ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, এই স্লোগান আমাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের মানুষ শান্তিতে আছে। বিএনপির চুরি-দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের কারণে জনগণ ২০০৮ সালে প্রত্যাখ্যান করেছে। জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুন করা এটাই তারা শুধু জানে।
বিএনপি নেতাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের সমালোচনা করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জিয়াউর রহমান নাকি ভাঙা স্যুটকেস রেখে গিয়েছিলেন। তা ভাঙা সুটকেস কি জাদুর বাক্স হয়ে গেল নাকি, যেখান থেকে টাকা বেরোয়?
সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অস্বাভাবিক সরকার হলে তাদের মূল্য বেড়ে যায়। আমরা নাকি তাদের মূল্য বুঝি না। কার কত মূল্য তা মেপে দেখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করে দিয়েছি। আমরাই দেশের উন্নয়ন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করতে আমি প্রস্তুত। বোমা-গ্রেনেড কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরেন। এসব উন্নয়নের কারণে ঢাকাবাসী আবারও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী সবাই ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, সকাল সকাল ভোট দেবেন। কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা দমিয়ে রাখতে পারবে না।
শেখ হাসিনা এ সময় ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্কমকর্তা সাবিরুল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে এ জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসরণের শর্তে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১ জানুয়ারি দুপুর ২টায় ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনাপত্তি জ্ঞাপন করা হলো।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-১৩ আসনের প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ১ জানুয়ারি রাজধানীতে নির্বাচনী জনসভা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এদিন বিকেল ৩টায় মোহাম্মদপুরের শারীরিক চর্চাকেন্দ্র মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তন করে কলাবাগানে নেওয়া হয়।
এসআর