আওয়ামী লীগ ক্যু করে ক্ষমতা দখল করেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (২ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ির নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই দাবি করেন।
আমীর খসরু বলেন, বিএনপির আন্দোলন গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন। এটা কোনো দলের বা ব্যক্তির একক আন্দোলন নয়। এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাব। কিন্তু সেই অপশক্তি বোমা, সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার ও গুম, খুনের মাধ্যমে জনগণের সে অধিকার আবার কেড়ে নিয়েছে।
'কিন্তু ভালো খবর হচ্ছে আন্দোলনের দাবি ছিল এ ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনে যাবে না। সে আহবান বিএনপিসহ বাংলাদেশের সমস্ত রাজনীতিবিদ সাড়া দিয়েছে শুধু গুটি কয়েক ভিক্ষুক রাজনীতিবিদ ছাড়া। প্রায়ই সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি একপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজ একপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের পেশাজীবি ও সাংবাদিক ভাইরাও একটি পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ বিএনপির ডাকে সাড়া দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যায়নি বলে দাবি আমীর খসরুল। তিনি বলেন, এটা কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচনে তো দুই পক্ষ থাকবে। যেখানে দুই পক্ষ থাকবেনা সেটা নির্বাচন হতে পারে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগে যোগ হয়েছিল গায়েবি মামলা, নির্বাচনের পর যোগ হয়েছে ডামি প্রার্থী। ডামি প্রার্থী, ডামি ভোটার আর ডামি নির্বাচন এসব শব্দ যোগ হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। যারা গেছে তাদের স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভয় দেখিয়েছে যাওয়ার জন্য। সরকারি কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধা ছিনিয়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিতদের কাছ থেকে সরকারি কার্ড পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এতকিছুর পরও বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনে যায়নি। অর্থাৎ এ গণভোটে বাংলাদেশের মানুষ এত চাপের মধ্যে, এত গুম, খুনের মধ্যে সে রেজিমকে প্রত্যাখান করেছে। এটা হচ্ছে আন্দোলনের সুফল। অনেক বলছে ক্ষমতা নিয়ে নিয়েছে। আরে ক্ষমতা! ক্ষমতা তো অনেকভাবে নেওয়া যায়। আমরা দেখেছি বাংলাদেশসহ অনেক দেশে সামরিক বাহিনী ক্যু করে ক্ষমতা নিয়ে নেয়। আওয়ামী লীগ সে ক্যু করেছে। জনগণের তো এখানে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
খসরু বলেন, বাংলাদেশে গত ৭ জানুয়ারি যে গণভোট হয়েছে সেখানে জনগণের জয় হয়েছে। গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। বিএনপির জয় হয়েছে। যারা এ আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথে জীবন দিয়েছে, জেলে গিয়েছে, খুন ও গুম হয়েছে তাদের জয় হয়েছে। এ জয়কে আগামী দিনে বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের আন্দোলনের যে ধারা সেটা চালিয়ে যেতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক ম্যা মা চিং, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সি. সহ সভাপতি এনামুল হক এনাম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, বান্দরবান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, উত্তর জেলা বিএনপি'র সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দিন প্রমুখ।