বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে ডিম মজুত করার অপরাধে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় তিনটি কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বুধবার দুপুরে ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় শাহিন এন্ড ব্রাদার্স লিমিটেড নামের একটি কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর।
এসময় অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান, সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল। এছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকও সঙ্গে ছিলেন।
অভিযানে দেখা যায়, মাসুদুর রহমান এবং তাইজুর নামের দুজন ব্যক্তি শাহিন এন্ড ব্রাদার্স লিমিটেড নামের কোল্ড স্টোরেজে এ বছরের ২৩ নভেন্বর থেকে পাঁচ লাখ ৯১ হাজার ডিম মজুদ করেছেন। এসব ডিম কবে বাজারে ছাড়া হবে তার সঠিক কোনো তথ্য জানা নেই কোল্ড স্টোরেজে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের।
পরে মাসুদুর রহমান এবং তাইজুরকে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। মোবাইলের মাধ্যমে দুজনের সঙ্গে কথা বলেন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এসময় মাসুদুর রহমান জানান, তিনি এই মুহুর্তে ব্যস্ত আছেন। আসতে পারবেন না। তিনি কাপ্তান বাজারে মুরগির ডিমের ব্যবসা করেন। ডিম বিক্রি হচ্ছে না, চাহিদা কম থাকায় ডিম মজুত করে রেখেছেন বলে জানান মাসুদুর রহমান। বাজারে ডিমের চাহিদা বাড়লে কোল্ড স্টোরেজ থেকে এসব ডিম বাজারে ছাড়বেন বলেও জানান তিনি।
ডিম মজুতকারী আরেকজন ব্যবসায়ী তাইজুর সরাসরি উপস্থিত হয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জানান, তিনি নারায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকা এবং ঢাকায় ডিম সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। তিনি কমিশনে ডিমের ব্যবসা করেন। বাজারে চাহিদার তুলনায় খামারে ডিমের উৎপাদন বেশি হওয়ায় ডিম মজুত করেছেন। বাজারে চাহিদা বাড়লে ডিম বাজারে ছাড়বেন।
তবে এই দুজন ডিম মজুতদারের যুক্তিতে সুন্তুষ্ট হোননি ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, বাজারে যথেষ্ট ডিমের চাহিদা রয়েছে। যেহেতু এখন ডিমের দাম কম, তাই বেশি দামে বিক্রির জন্য কৃত্তিম সংকট তৈরি করতে এসব ডিম মজুত করে রাখা হয়েছে।
উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, সরকার ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ায় বাজারে এখন ডিমের দাম কম। দাম কমে যাওয়ায় কিছু অসাধু চক্র ডিম মজুত করতে শুরু করেছে। আমরা আজ হাতেনাতে প্রমাণ পেলাম। এসব ব্যবসায়ীর উদ্দেশ্য হলো ডিমের বাজার আবার অস্থির করা। এটা প্রতিরোধ করার জন্য ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমাদের আজকের অভিযান। আমাদের এই অভিযান অব্যহত থাকবে যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী ডিমের বাজার আবার অস্থিতিশীল করতে না পারে।
তিনি বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নির্দেশনা দিয়েছেন, সারাদেশে যদি কোনো ব্যবসায়ী ডিম মজুত করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোক্তা অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, আজকে যে দুই ব্যবসায়ীর ডিম মজুতের তথ্য পেলাম, তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আজকের মধ্যে এসব ডিম বাজারে ছাড়তে হবে। যদি না ছাড়ে তাহলে ভোক্তা অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় এসব ডিম আমরা বাজারে বিক্রি করবো।
পরে আরাও দুটি কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। তবে সেগুলোতে ডিম মজুত রাখার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এসআর