লিভার-কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিপুল পরিমাণ অবৈধ ও নিম্নমানের বিভিন্ন ব্রান্ডের কসমেটিকস জব্দ করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।
মঙ্গলবার রাতে জব্দকৃত এসব কসমেটিকস বিএসটিআই’র ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এসব পণ্যে বিএসটিআই’র নির্ধারিত মানের চেয়ে প্রায় আড়াই হাজার গুণেরও বেশি ক্ষতিকর হাইড্রোকুইনোন (রাসায়নিক পদার্থ) পাওয়া যায়। যা স্কিন ক্যানসারসহ লিভার ও কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিএসটিআইতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মহাপরিচালক (গ্রেড-১) এস এম ফেরদৌস আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
বিএসটিআই’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন্নেসা খানমের নেতৃত্বে বুধবার রাতে অবৈধ ও নিম্মমানের প্রায় ১ কোটি টাকার কসমেটিকস পণ্য জব্দ করে বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএসটিআই নির্ধারিত মান অনুযায়ী হাইড্রোকুইনোন এর মাত্রা থাকতে হবে সর্বোচ্চ ৫ মি.গ্রাম/কেজি, কিন্তু রিপোর্টে আড়াই হাজার গুণেরও বেশি হাইড্রোকুইনিন পাওয়া যায়। ল্যাবে পরীক্ষাকৃত এই ব্রান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ১৩৯৬৮.৩ মি.গ্রাম/কেজি যা বিএসটিআই নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড এর তুলনায় ২৭৯৩ গুণ বেশি।
এছাড়া স্কিনলাইট ব্রান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ১২১৭৫.৭০ মি.গ্রাম/কেজি, স্কিনসাইন ব্রান্ডের স্কিন ক্রিমে ১২৩২৫.৩৯ মি.গ্রাম/কেজি, নো স্কেয়ার্স ব্রান্ডের স্কিন ক্রিমে ১২৪৫২.৯৫ মি.গ্রাম/কেজি, মাইফেয়ার ব্রান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১৮৭১.১৪ মি.গ্রাম/কেজি, ইলোসন-এইচটি ব্রান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ১২১০৮.৬১ মি.গ্রাম/কেজি, মিরাকল ব্রান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১৯১৬.১৯ মি.গ্রাম/কেজি, স্কিন সাইন ব্রান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১৩৫৪.২৬ মি.গ্রাম/কেজি, স্কিন সানরাইজ ব্রান্ডের স্কিন ক্রিমে ১১৮৪৩.৫৯ মি.গ্রাম/কেজি হাইড্রোকুইনোন পাওয়া যায়।
রাজধানীর চকবাজার এলাকায় মেসার্স সেঞ্চুরি ট্রেড ও মেসার্স স্বর্ণা ইন্টারন্যাশনালকে বিএসটিআই’র লাইসেন্স ও ছাড়পত্র গ্রহণ ছাড়া এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন ব্রান্ডের স্কিন ক্রিম, বেবি অয়েল, লিপস্টিক, স্কিন পাউডার, হোয়াইটেনিং ক্রিম পণ্য বাজারজাত করার অপরাধ অপরাধ আমলে নিয়ে আদালত বিএসটিআই আইন, ২০১৮ অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে সিএম লাইসেন্স ও ছাড়পত্র গ্রহণ করে পণ্যসামগ্রী বাজারজাত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এছাড়া ওজন ও পরিমাপ মানদন্ড আইন, ২০১৮ অনুযায়ী উক্ত পণ্যসমূহ মোড়কজাত নিবন্ধন সনদ গ্রহণ ছাড়া বিক্রয় বিতরণ করায় সর্বমোট মোট ২লাখ টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়। সর্বমোট দুটি আইনে ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।