ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৫ মে ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যমুনার ভাঙ্গণে দিশেহারা এলাকার মানুষ

বাংলা ডেস্ক
মে ১৫, ২০২৫ ৪:৫৮ অপরাহ্ণ । ৩১ জন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের চর ঠুটিয়া, সোনাতনী ইউনিয়নের মাকড়া, ধীতপুর, কুড়সি, বারপাখিয়া, বড় চামতারা, বানতিয়ার, গালা ইউনিয়নের বৃ-হাতকোড়া ও মোহনপুর গ্রামে এই ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এই ভয়াবহ ভাঙ্গণের তান্ডবে এসব গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি, বাড়িঘর, মসজিদ, মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট টুকুও বিলিনের পথে। গত ১ মাস আগেও যেখানে বাড়িঘর ছিল, এখন সেখানে অথৈ পানি। এখানকার জমিতে প্রচুর পরিমানে পটল, বেগুন, ধান, বাদাম, মাষকালাই, বাঙ্গী, সব্জি, ধনিয়া সহ সব ধরণের ফসল হয়ে থাকে।

এছাড়া এখানকার কৃষকেরা ষাড় গরু লালন পালন করে বাড়তি আয় করে। ফলে যমুনা নদী বেষ্টিত সোনাতনী ইউনিয়নের মানুষ আগের চেয়ে অনেক স্বচ্ছল হয়ে উঠেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে নতুন করে যমুনার ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। ফলে এ এলাকার অধিকাংশ ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। ফলে এখানকার কৃষকেরা নতুন করে ভাঙ্গণের কবলে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে ধীতপুর গ্রামের কালু মোল্লা বলেন, এই চরে প্রচুর পরিমানে পটল, বেগুন, ধান, বাদাম, মাষকালাই, বাঙ্গী, সব্জি, ধনিয়া সহ সব ধরণের ফসল হয়ে থাকে। ৮৮ সাল থেকে এখানে ভাঙ্গা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১১ ভাঙ্গা দিছি। পটল সহ নানা ফসল বুনে ভালোই চলছিলাম। এখন বাড়িঘর ও ফসলি জমি সবকিছু নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ায় এখন অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকি। এ ঘরটিও ভাঙ্গণের কবলে পড়েছে। এ ভিটা ভেঙ্গে গেলে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবো, কি খাবো তা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছি।

এ বিষয়ে ফজর আলী ব্যাপারী বলেন, ভাংতে ভাংতে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। চ্যাংরা থেকে বুড়া হয়ে গেলাম তবুও ভাঙ্গণরোধে কোনো সরকারই ব্যবস্থা নিল না।

তিনি বলেন, বিগত সরকার আমলে স্থানীয় এমপির কাছে ভাঙ্গণ রোধে ব্যবস্থা নিতে দরখাস্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তো এখন নাই। বিদায় নিয়েছে। এ সরকার যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে আমরা বাঁচবো। না হলে এ ভাবেই আস্তে আস্তে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহমেদ বলেন, গত ৬ বছরে এ ৩টি ইউনিয়নের গ্রামগুলিতে কমপক্ষে ২৮০ হেক্টোর ফসলি জমি যমুনা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। আবার এর বিপরিত পাশে ৯০ হেক্টোর বেশি জমি জেগে উঠেছে। ফলে এ ইউনিয়নে জমির পরিমাণ কমেনি। তবে যে সব ফসলি জমি নতুন করে ভেঙ্গে যাচ্ছে, সে সব জমির মালিক তাৎক্ষণিকভাবে কিছুটা হলেও ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: কামরুজ্জামান বলেন, ভাঙ্গণ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ভাঙ্গণরোধে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলে দ্রুত বস্তা ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।

এসবি/ এসআর