প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন জনগণের উন্নয়ন হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় বিএনপি মানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। বিএনপি-জামায়াতের কাজই হচ্ছে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা। মানুষ খুন তাদের একমাত্র গুণ। বিএনপি-জামায়াতের আর কোনো গুণ নেই।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন এই ২৮ অক্টোবর কীভাবে পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বেহুঁশ হয়ে গেছে তাও ছাড়েনি। তারপর কুপিয়েছে। ৪৫ জন পুলিশ আহত হয়েছে। সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি। সাংবাদিকদের তারা পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ স্টেশনে ঢুকে হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স ভেঙেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ২০১৩ সালেও একই কাজ শুরু করেছিল। হাজার হাজার অফিস-আদালত, গাড়ি পুড়িয়েছিল তখন। কিন্তু তারা নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি, জনগণ প্রতিরোধ করেছিল। আজও আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, সন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করুন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি, যারা আগুন দিতে যাবে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। যারা এভাবে আগুন দিয়ে মানুষ মারে তাদের কখনো ছাড় দেওয়া হবে না।
সরকারপ্রধান বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের ইহুদিরা হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে। বিএনপির লোকেরা বোধহয় ইসরায়েলিদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। ওরা বাংলাদেশের ধ্বংস চায়। ওদের চরিত্র কোনো দিন পাল্টাবে না।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একজন তো এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত। আরেকজন ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে বলেছিল আর কোনোদিন রাজনীতি করবে না। এখন লন্ডনে বসে বসে যত টাকা দুর্নীতি ও চুরি করেছিল, সেই টাকা খরচ করে আর আগুন জ্বালিয়ে মানুষ মারে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জানে তারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাত্র ৩০টা সিট পেয়েছে। তারা জানে তাদের নেতা নেই। মুণ্ডুহীন একটা দল। একটা পলাতক আসামি আরেকটা কারাগারে। সেই দল এদেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। একটা অসামাজিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।
গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এই আন্দোলন করছে, তাদের কাছে আমরা প্রশ্ন- আমি প্রথমবার ক্ষমতায় এসে দেখি গার্মেন্টস শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ৮০০ টাকা, আমি করেছিলাম ১৬০০ টাকা। খালেদা ক্ষমতায় এসে এক পয়সাও বাড়ায়নি। পরের বার সরকারে এসে প্রথমে করলাম, ৩২০০, দ্বিতীয় দফায় ৫৩০০, তৃতীয় দফায় ৮২০০ আর এবার করলাম ১২৫০০ টাকা।
শেখ হাসিনা বলেন, হ্যাঁ, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, মানুষের কষ্ট হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে সরকারি চাকুরেদের জন্য ৫ পার্সেন্ট, আর গার্মেন্টস শ্রমিকদের বাড়িয়েছি ৫৬ পার্সেন্ট। কিন্তু তা সত্ত্বেও গার্মেন্টস শিল্পে এই ধ্বংস কেন, কারা করছে এসব, তাদের খুঁজে বের করা দরকার।
এ সময় আগুন সন্ত্রাসীদের কঠোর হাতে প্রতিহত করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য এ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা। ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছি। ধারাবাহিক গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে সেটাই আমার পাওয়া। বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। জনগণকে পরিবার হিসেবে আমি আপন করে নিয়েছি। তাই তাদের কল্যাণের জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে সেটাই আমার পাওয়া। বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। জনগণকে পরিবার হিসেবে আমি আপন করে নিয়েছি। তাই তাদের কল্যাণের জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি।
জনগণের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা বারবার আমাদের ভোট দিয়েছেন। ভোট দিয়ে আপনাদের সেবার করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আর সেই সুযোগটা দিয়েছেন বলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
এসআর