ঢাকাশুক্রবার , ২৩ মে ২০২৫
  • অন্যান্য

বাউফলে সাংবাদিক বিরোধি মিছিল করালেন ইউএনও

বাংলা ডেস্ক
মে ২৩, ২০২৫ ৭:৩২ অপরাহ্ণ । ৫১ জন

এবার সাংবাদিক বিরোধি মিছিল করানোর অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

এর আগে স্থানীয় সাংবাদিক শহিদুল হক ওরফে এমরান হাসান সোহেলকে জেলে ভরে হুমকি দিয়ে তিনি আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তোলেন। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর ইউএনও তার অনুসারিদের দিয়ে শুক্রবার সাংবাদিক বিরোধি মিছিল-সমাবেশ করান। মিছিলের নেতৃত্ব দেন ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী কয়েকজন শিক্ষক নেতা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত সোমবার (১৯ মে) ইউএনও মো. আমিনুল ইসলাম একটি অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংবাদিক শহিদুল হক ওরফে এমরান হাসান সোহেলকে জেলে ঢুকানোর হুমকি দেন। এরপরই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন ছাত্র জনতা। সাংবাদিককে জেলে ভরে হুমকির প্রতিবাদে ইউএনও আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বুধবার ঝাড়ু মিছিল করেন তারা। ইউএনওর অপসারণ দাবী করে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন বিক্ষোভকারিরা। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর ক্ষুব্দ হন ইউএনও। যারা সংবাদ প্রকাশ করেছে তাদেরকে হলুদ সাংবাদিক আখ্যা দিয়ে শুক্রবার সকালে তিনি একটি মিছিল করান। সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মিছিলটি বের হয়ে পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণের পর পুনরায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।

ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলের বাউফল উপজেলা শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ধানদি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুর মোর্শেদ, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার ভাই ও নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম নাসির উদ্দিন সবুজের নেতৃত্বে শতাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা এ মিছিল করেন।

মিছিলে বিএনপির এক নেতার অনুসারি কয়েকজন কর্মী ও সমর্থককেও দেখা গেছে। মিছিলে-ধরি ধরি ধরিনা, ধরলে কিন্তু ছাড়মুনা। প্রশাসনের অপমান চলবে না-চলবে না, ইউএনও স্যারের অপমান-সহ্য করা হবে না, সাংবাদিকদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও-গুড়িয়ে দাও ইত্যাদি ভাষায় শ্লোগান দেওয়া হয়। মিছিল পরবর্তী সময় উপজেলা পরিষদের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শাহিন রেজা, আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ ও কারখানা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমূখ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিছিলে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষক বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইউএনও স্যার। অনিচ্ছা থাকার পরও আমাদেরকে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। মিছিলে না আসলে বেতন ভাতাদি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তখন পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়বো।

অপর একটি সূত্র জানায়, ইউএনও আমিনুল ইসলাম পতিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মোর্শেদ ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার ভাই কেএম নাসির উদ্দিনকে ডেকে নিয়ে সাংবাদিক বিরোধি মিছিল আয়োজন করার দায়িত্ব দেন।

অবশ্য সাংবাদিক বিরোধি মিছিল করানোর অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, কারা মিছিল করেছে, কেন করেছে, আমি কিছুই জানি না।

এদিকে আওয়ামী লীগের দোসররা প্রকাশ্যে সাংবাদিক বিরোধি মিছিল ও নানা ধরণের আপত্তিকর শ্লোগান দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ইউএনও আমিনুল ইসলাম তার পূর্বের কর্মস্থল মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় চাকরী কালীণে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। সেখানে তিনি পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন। এখানে এসেও ফের দুর্নীতি শুরু করেছেন। গণমাধ্যমে লেখালেখি করায় তিনি সাংবাদিক বিরোধি মিছিল করিয়েছেন। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

এএস/এসআর