ঢাকাশুক্রবার , ২৩ মে ২০২৫
  • অন্যান্য

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না: বিশেষ সহকারীর স্পষ্ট ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২৩, ২০২৫ ৮:৩৪ অপরাহ্ণ । ৪১ জন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করছেন না বলে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

শুক্রবার (২৩ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান। তিনি লেখেন, “অধ্যাপক ইউনূসের ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমতার কোনো আগ্রহ নেই, তবে দেশের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য তার নেতৃত্ব এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই মুহূর্তে তার পদত্যাগের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।”

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও সক্রিয় ও গতিশীল হতে হবে। উপদেষ্টাদের ভূমিকাকে আরও কার্যকর করে তুলতে হবে এবং সরকারের অগ্রগতি জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত এই সরকারের প্রতি জাতির উচ্চ প্রত্যাশা রয়েছে, যা পূরণে নেতৃত্ব দিতে হবে অধ্যাপক ইউনূসকেই।”

তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন। তার ভাষায়, “রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংলাপ এবং তাদের মতামত গ্রহণযোগ্য করে তোলা এখন অত্যন্ত জরুরি। এই সময়ে রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আধুনিক বিশ্বে সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। সেনাপ্রধানের নির্বাচনী সময়সীমা নিয়ে বক্তব্য একটি এখতিয়ারের বাইরে চলে যাওয়া ভুল ছিল। তবে সেনাবাহিনীর প্রতি সম্মান ও আস্থা বজায় রাখতে হবে। হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না, তবে এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টাও কাম্য নয়।”

আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে তিনি ধারণা দিয়ে বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অনুমান, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষে আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করার এখতিয়ার কেবল প্রধান উপদেষ্টার।”

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি জুলাই মাসে ঘোষিত সনদ অনুযায়ী সব পক্ষকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

তার পোস্টের শেষাংশে তিনি উল্লেখ করেন, “২০২৫ সালের জুলাই-আগস্টে আমরা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের’ প্রথম বার্ষিকী জাতীয়ভাবে উদযাপন করব। ইনশাআল্লাহ, আগস্টের মধ্যেই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম রায় ঘোষণা হবে বলে আমরা আশাবাদী। এই যাত্রায় আমাদের থামানো যাবে না।”

ফেসবুক পোস্টটি রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে চলমান গুঞ্জনের মধ্যে তার ঘনিষ্ঠ সহকারীর এই বক্তব্য একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে।

তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সরকারের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক রোডম্যাপ নিয়ে একটি ব্যক্তিগত পোস্টে এমন মন্তব্য কতটা নীতিগতভাবে গ্রহণযোগ্য। তবুও প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সরাসরি বক্তব্য না এলেও এই পোস্ট পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।