ঢাকাবুধবার , ২১ মে ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাহারি ফুলের সৌরভ

বাংলা ডেস্ক
মে ২১, ২০২৫ ৬:৪৪ অপরাহ্ণ । ৬৩ জন

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহনের চেয়ে এখন ফুল আর সবুজের রাজত্বটা চোখে পড়ার মতো। গাজীপুরের জৈনা বাজার থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত এলাকার সড়ক বিভাজকের উপর ফুটে আছে নানা রঙের বাহারি ফুল। এই সৌন্দর্যে শুধু পথচারীরাই নয়, যানবাহনের যাত্রীরাও চোখ জুড়িয়ে দেখছেন সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

গ্রীষ্মের খরতাপের মধ্যে বর্ষাকে স্বাগত জানাচ্ছে। আর লাল, নীল, হলুদ, বেগুণী কোথাও বা সাদা ফুলে ব্যস্ততম এই সড়কটি বর্ণিল সাজে সেজেছে এখন। বকুলের ভালবাসা, গন্ধরাজ, বেলী ও কামিনীর উতাল করা গন্ধে যাত্রীদের মধ্যে বয়ে দিয়ে যাচ্ছে এক অন্যরকম ভালবাসার ছোঁয়া।

দেশের অন্যতম লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত প্রায় ৮৭কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয় বেশ কয়েকবছর আগে। ফোর লেনের এক লেনের গাড়ীর হেড লাইটের আলো যাতে অন্য লেনে না যায় (দুর্ঘটনা রুখতে) সেজন্য সড়ক বিভাজকের উপর রোপন করা হয়েছিল ৪০প্রজাতির প্রায় লক্ষাধিক উদ্ভিদ। এদের মধ্যে রয়েছে নীল কাঞ্চন, কামিনী, কৃষ্ণচুড়া, জোগাটগর, রাধাঁচূড়া, অগ্নিস্বর, পলাশ, গৌরিচূড়া, ছাতিম, কনকচাঁপা, কদম, কাঠ বাদাম, জারুল ও রক্তকবরী। এছাড়াও ঔষুধী গাছ হিসেবে রয়েছে নীম গাছ।

মহাসড়কে ভ্রমন আনন্দদায়ক পরিবেশবান্ধব করতে ঋতুর সাথে মিল রেখে এসব উদ্ভিদ রোপন করা হয়েছে। সারা বছর জুড়েই এই মহাসড়কের সড়ক বিভাজকের উপর রোপিত বৃক্ষগুলো সৌন্দর্য বা ছায়া বিলিয়ে গেলেও বৃষ্টিতে নয়নাভিরাম পরিবেশে ভিন্ন আবহ তৈরী হয়। বিশেষ করে বেগুনি আর নীলাভ রঙের জারুল ফুল চোখে পড়ার মতো। জারুলের বেগুনি মায়া আর লাল সোনাইলের গোলাপি আভায় মোহিত মহাসড়কে চলাচলকারী হাজারো পথচারী। এছাড়াও কৃষ্ণচূড়ার লাল আভা যেন মিশে গেছে প্রকৃতিতে। সন্ধ্যা হলেই সারা রাত ধরে গন্ধ ছড়িয়ে দেয় কামিনি।

পথচারী মাসুদ রানা বলেন, “প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করি এই রোড দিয়ে। আগে এই সড়ক শুধু ধুলাবালিতে ভরা ছিল, এখন ফুল দেখে মন ভালো হয়ে যায়।” তবে সড়কের মাঝে বর্জ্য ফেলে রাখায় ফুলের সৌন্দর্যও ম্লান হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি এলাকায়।

গাড়িচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই রোডে ফুলগাছের কারণে রাস্তার পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। গাড়ি চালাতেও বেশ ভালো লাগে।”

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী সাইদ চৌধুরী বলেন, অনেক জায়গায় বিভাজকের গাছগুলো নষ্ট হয়ে গেছে, সেখানে গাছ লাগানো প্রয়োজন। আর যেগুলো আছে সমন্বিতভাবে সবারই পরিচর্যা করার একটি দায়িত্ব আছে। আমাদের আশা এসব গাছের যত্নে সবাই এগিয়ে আসবেন।

এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল আলম বলেন, মহাসড়কের সৌন্দর্যবর্ধন এবং রাতের বেলায় বিপরীত দিকের গাড়ির হেডলাইটের আলো যেন চালকের চোখে না পড়ে এ জন্য ডিভাইডারে বিভিন্ন ধরনের গাছের পাশাপাশি এসব ফুলের গাছ রোপণ করা হয়েছে। বর্তমানে এসব ফুলের সৌন্দর্যে চলাচলের সময় মানুষ মুগ্ধ হচ্ছেন। তবে কয়েকটি স্থানে কিছু গাছ মরে গেছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে নতুন করে যেসব স্থানে বৃক্ষ রোপণ করা হবে। এ ছাড়া সওজের নিযুক্ত শ্রমিকেরা নিয়মিত বিভাজকের গাছগুলোর পরিচর্যা করে যাচ্ছেন।

এফএ/এসআর