জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদ চলমান আন্দোলন ও কর্মবিরতি কর্মসূচি স্থগিত করেছে। এর ফলে আগামীকাল সোমবার (২৬ মে) থেকে ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রোববার (২৫ মে) রাত আটটার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, এনবিআর নিয়ে জারি করা অধ্যাদেশটি আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয়ভাবে সংশোধন করা হবে।
উল্লেখ্য, বিকেলেই এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের সব শুল্ক ও কর দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির কথা বলা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী আমদানিকে এ কর্মসূচির আওতামুক্ত রাখা হলেও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। এরপরই অর্থ মন্ত্রণালয় আশ্বাসমূলক বিবৃতি দেয়, যা আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি প্রত্যাহারে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
প্রসঙ্গত, সরকার ১২ মে এক অধ্যাদেশ জারি করে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
আজ সারা দিন আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনসহ দেশের বিভিন্ন শুল্ক স্টেশনে কর্মবিরতি পালন করা হয়। এনবিআরের নিচতলায় প্রধান ফটকের পাশে কর্মকর্তারা অবস্থান নেন, কার্যত প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে। একই ধরনের কর্মবিরতি চলে ঢাকা কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল, ভোমরা স্থলবন্দরসহ অন্যান্য স্থলবন্দরেও।
সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলো চার দফার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল:
এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা;
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ;
রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ও প্রস্তাবনা জনসমক্ষে প্রকাশ;
সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার নিশ্চিত করা।
আন্দোলন স্থগিত হলেও দাবি আদায়ে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে কর্মসূচি আবারও চালু করার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে ঐক্য পরিষদ।
এসআর