জহুরুল ও মজনুসহ আরও শতাধিক মানুষ বসবাস করেন আশ্রয়ণ প্রকল্পে। তাদের চলে দুর্বিষহ জীবন। যেন নুন আন্তে পান্তা ফুরায় অবস্থা। দরিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করে কোনমতে ঠাঁই নিয়েছেন গুচ্চগ্রামে। এরপর থেকে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধায় বঞ্চিত এখানকার শতাধিক পরিবার। আসছে ঈদুল আজহায় তাদের কপালে জুটোনি ভিজিএফের কার্ড। এমনি অভিযোগ আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের।
বলছিলাম- গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের রাঘবেন্দপুর (লালদিঘি) আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসাবস করা পরিবারদের কথা। শুধু রাঘবেন্দপুরেই নয়, উপজেলায় রসুলপুর, ধাপেরহাটসহ বিভিন্ন স্থানে এমন অসংখ্যা আশ্রিত মানুষ এবার ঈদে বঞ্চিত হচ্ছেন ভিজিএফ সুবিধা থেকে।
রাঘবেন্দপুর (লালদিঘি) আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন, হামরা গরিব মানুষ। কোনো জমি-জিরাত নাই। এ জন্নে সরকারের গুচ্ছগ্রামের ঘরে বউ-ছইল নিয়্যা কোমতে থাকি। চেয়ারম্যান-মেম্বরেরা নাকি ১০ সের করে চাউল দিতেছে সেটাতো হামরা পাইনেই। হামার এটে মেলাগুলা মানুষ গুচ্ছগ্রাম থাকে কেউ চাউলের কাট পায়নাই। হামারঘরে ঈদ বলতে কিচুই বুঝিনা বাহে। ঈদের দিনত কি খামো এই চিন্তায় আতত নিন্দে ধরে না বাবা।
ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিনুর রশিদ মন্ডল জানান, তার ওয়ার্ডে প্রায় ২ হাজার মানুষ ভিজিএফ সুবিধা পাওয়ার উপযোগি। সেখানে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১৬০টি শ্লিপ ভাগ পেয়েছেন। আর লালদিঘি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১১৩ পরিবার বসবাস করছে। চাহিদার চেয়ে বরাদ্দ অপ্রতুল থাকায় এ গুচ্ছগ্রামে সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
ওই ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান সরকার বলেন, এ ইউনিয়নে ভিজিএফের ৪ হাজার ২৪৮ কার্ড বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রত্যেক সুবিধাভোগি পাবেন ১০ কেজি করে চাল। বুধবার (২৮ মে) এসব চাল বিতরণ করা হবে। আর রাঘবেন্দপুর (লালদিঘি) আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা পরিবারের মধ্যে ২০-২৫ জনকে এই সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ময়নুল হক জানান, আসছে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এ উপজেলায় দুস্থদের খাদ্য সহায়তার জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিএফ) ৪১ হাজার ৮ টি কার্ডের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে এসব কার্ড ১১ ইউপি চেয়ারম্যানদের বন্টন করে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগি বঞ্চিত না হয় সে ব্যাপারে চেয়ারম্যানদের পরামর্শ প্রদান করা হয়।
টিএইচজে/ এসআর